নোয়াখালীতে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর মাথার চুল কেটে সারা শরীরে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রবাসী স্বামী মোশাররফ হোসেন উজ্জলের বিরুদ্ধে। আহত স্ত্রী ইয়াসমিন কলিকে (২৭) কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার সোন্দলপুর ইউনিয়নের বড় রামদেবপুর গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে নিলুফার ইয়াসমিন কলির সঙ্গে বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মোশাররফ হোসেন উজ্জলের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে পাঁচ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে।
ভুক্তভোগী ইয়াসমিন কলি জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্যে স্বামী তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতে থাকেন। পরে বাবার বাড়ি থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য কয়েক দফায় স্বামীকে টাকা এনে দেন কলি। গত দুই মাস আগে তার স্বামী সৌদি প্রবাসী মোশাররফ হোসেন উজ্জল দেশে ফেরার পর আবারও যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করেন।
সর্বশেষ গত বুধবার রাতে জেলা শহরের বসিরার দোকান এলাকায় ভাড়া বাসায় যৌতুকের জন্য কলির মাথার চুল কেটে দিয়ে গরম খুন্তি দিয়ে সারা শরীর ছ্যাঁকা দিয়ে কলিকে ঝলসে দেন উজ্জল। একপর্যায়ে ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে বাবার বাড়িতে ওঠেন কলি। সেখান থেকে শুক্রবার তাকে চিকিৎসার জন্য কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও জানান, সেখানেও সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালান উজ্জল। সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। সেখান থেকে বিকেলে তাকে জেলা সদরে নেয়ার সময় আবারও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন উজ্জল। পরে স্থানীয় লোকজনের তাড়া খেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
এদিকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা ও সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আবদুর রহীম খবর পেয়ে রাতে কলিকে দেখতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে যান। এ ঘটনাকে বর্বরোচিত অবহিত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন পুলিশের কর্মকর্তারা।
হাসপাতালের চিকিৎসক নাসির উদ্দিন জানান, কলির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার পুরো শরীরে গরম লোহা দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়ার চিহ্ন রয়েছে।
বার্তাবাজার/এমকে