ব্রিজ বানাতে মসজিদ ভাঙছেন মুসলিমরা!

সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। মন্দিরের অংশের বাইরে মসজিদের জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়ার কথা বলেছে আদালত। এই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ইতিমধ্যেই মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছেন। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে চার মাসের মধ্যে রাম মন্দির তৈরি হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে যখন এই ধরনের টানাপোড়েন চলছে। ঠিক তখনই এলাকার উন্নয়নের জন্য ৪০ বছরের পুরনো মসজিদ ভাঙতেও পিছপা হচ্ছেন না শ্রীনগরের বাসিন্দারা।

জানা গেছে, শ্রীনগরের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই রামপোরা এলাকার কুমারওয়ারিতে ঝিলম নদীর ওপর একটি ব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু, ব্রিজটি তৈরির পথে অন্যতম বড় বাধা ছিল ওই এলাকায় থাকা ৪০ বছরের পুরনো একটি মসজিদ। তাই প্রশাসন বা স্থানীয়রা চাইলেও কিছু মৌলবাদী মানসিকতার মানুষ এতদিন ধরে ব্রিজের নির্মাণ কাজে বাধা সৃষ্টি করছিল বলে অভিযোগ।

তবে গত ৫ আগস্ট সংসদে ৩৭০ ও ৩৫(এ) ধারা প্রত্যাহার হতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। ফের ওই এলাকার সাধারাণ মানুষদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন শ্রীনগর জেলা উন্নয়ন কর্মকর্তা সাহিদ ইকবাল চৌধুরি।

এরপরই ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে একজোট হয়ে ওঠেন এলাকার সাধারণ মানুষ। ধর্মাচরণের থেকে এলাকার উন্নয়নকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মসজিদ ভাঙতে রাজি হয়ে যান তারা। গত শুক্রবার এই বিষয়ে লিখিত চুক্তিতে সই করে ওই মসজিদের পরিচালন সমিতি ও শ্রীনগর জেলা উন্নয়ন দপ্তর। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুরু হয় মসজিদ ভাঙার কাজ। ব্রিজ তৈরির কাজ শেষ হলেই একটু দূরে সরকারি খরচে মসজিদ বানিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে শ্রীনগরের জেলা উন্নয়ন কর্মকর্তা সাহিদ ইকবাল চৌধুরি বলেন, ২০০২ সালে এই ব্রিজ তৈরির বিষয়টি চূড়ান্ত হলেও কাজ আটকে ছিল। কোনওভাবেই মসজিদ ভেঙে ব্রিজ তৈরি করা যাচ্ছিল না। কিন্তু, বর্তমানে সবাই সমস্যার কথা বুঝতে পেরে একজোট হয়েছেন। ফলে আর কোনও বাধাই রইল না। অবশ্য শুধু মসজিদই নয়, এই ব্রিজ তৈরির জন্য একটি দমকলের অফিস ও বেশ কয়েকটি বাড়িও ভাঙতে হবে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর