সংক্ষিপ্ত সফরে যেতে চায় বিসিবি, নারাজ পাকিস্তান

অধিক নিরাপত্তার মধ্যে মাসখানেক থাকাটা মানসিকভাবে বিপর্যয়ে পড়তে পারেন খেলোয়াড়রা। আমরা তাই আলোচনা করেছি, সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য পাকিস্তান সফরে যেতে প্রস্তুত আছি। সেটা ওদের (পিসিবি) জানানো হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান আকরাম খান। তিনি বলেন, তারা চাচ্ছে টেস্টও যেন খেলা হয় এ নিয়ে কথাবার্তা চলছে।

আসন্ন টেস্ট সিরিজটা বাইরে আয়োজনের জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) অনুরোধ জানিয়েছে বিসিবি, এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলেও জানান তিনি।

জানা গেছে, পাকিস্তান সফরের আগেই নিয়োগ দেয়া হবে জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ। পছন্দের তালিকায় আছেন দক্ষিণ এশিয়ার কোচরাই।

পাকিস্তান সফরের আগেই নিয়োগ দেয়া হবে জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ, তালিকায় আছেন দক্ষিণ এশিয়ার কোচরাই এ নিয়ে আকরাম বলেন, আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রথমেই দেখতে হবে আমাদের দেশে আমরা কি ধরনের বোলার পাচ্ছি, নরম্যালি ১০০ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ স্পিড থাকে অন্যদেশে ১০০ থেকে ৪০ প্লাস থেকে।

কারা থাকছে এ সফরে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, যাদের এশিয়া এবং এশিয়ার বাইরে খেলার অভিজ্ঞতা আছে সেইসব খেলোয়াড়কে নেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।

অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান আরও বলেন, কিছু সংক্ষিপ্ত তালিকা আমরা করেছি। সবকিছু দেখা হয়ে গেছে এ সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে। আমাদের হাতে এখনও মাস খানেক সময় আছে, এরমধ্যে কাজ করে নেয়া যাবে বলে আশা করছি।

এদিকে গতকাল (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশকে একপ্রকার হুমকিই দিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান এহসান মানি। আসন্ন টেস্ট সিরিজ খেলতে হবে পাকিস্তানেই এমন হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন তিনি।

কেবল বাংলাদেশ সিরিজই নয়, নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামীতে সব সিরিজই পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন পিসিবি চেয়ারম্যান। এদিকে পাকিস্তানে টেস্ট খেলতে বাংলাদেশের অনীহা দেখানোয় হতাশ পাকিস্তানের কোচ ও টেস্ট অধিনায়ক।

পাকিস্তান সফর নিয়ে বিসিবি আছে দোটানায়। কোনো এক অদৃশ্য চাপে পাকিস্তানকে না বলতে পারেনি দেশের ক্রিকেট বোর্ড। আবার গণমাধ্যমের চাপে সরাসরি হ্যাঁ ও বলতে পারছে না। নানা ভনিতা করেই এবার বিসিবির প্রস্তাব, পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি খেললেও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হোক টেস্ট সিরিজ। তবে বিসিবির এমন প্রস্তাবে বিক্ষুব্ধ পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড।

পাকিস্তান ক্রিকেট দলের কোচ মিসবাহ উল হক বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের টেস্টটা এখানে হওয়া। ওরা যদি শেষ পর্যন্ত না আসে সেটি হবে খুবই হতাশাজনক। আমরা এমনিতেই টেস্ট কম খেলছি, এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ক্রিকেটাররা হতাশ হয়ে পড়বে। আর সেটি আমাদের প্রতি একধরনের অবিচার তো বটেই।

পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টেস্ট অধিনায়ক আজহার আলী বলেন, যখন পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হচ্ছে, বিভিন্ন দল খেলতেও আসছে তখন ওদের খেলতে না চাওয়ার অজুহাতটা ঠিক পরিষ্কার নয় আমার কাছে। যদি এশিয়ার দেশগুলোই একে অন্যকে সহযোগিতা না করে সেটি আসলে ভালো কিছু ডেকে আনবে না মনে হয়।

তবে পাকিস্তানি অধিনায়কের চেয়েও বড় হুমকিটা দিয়েছেন দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান এহসান মানি। সরাসরি নাকচ করেছেন বাংলাদেশের নিরপেক্ষ ভেন্যুর প্রস্তাবনা। জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশকে টেস্ট খেলতে হবে পাকিস্তানের মাটিতেই।

পাকিস্তানের সব ম্যাচ, সেটি বাংলাদেশ হোক কিংবা অন্য যে কোন দেশই হোক, পাকিস্তানেই অনুষ্ঠিত হবে। শ্রীলঙ্কা যদি এখানে আসতে পারে তাহলে অন্যদের আসতে সমস্যা কি? যদি তারা না আসতে চায় তাহলে তাদেরকে প্রমাণ করতে হবে যে পাকিস্তান অনিরাপদ। আমরা সারাবিশ্বকে দেখিয়েছি আমরা নিরাপদ। ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা কোন ঝুঁকি নিবো না।

পাকিস্তানের হাতে ট্রাম্প কার্ডটা মূলত তুলে দিয়েছে বিসিবিই। চলতি বছরই বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এবং বয়সভিত্তিক দল পাঠিয়েছে দেশটিতে। তারওপর খেলতে রাজি হয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজও। পিসিবিকে ক্রিকেট বোর্ডের এই সুযোগগুলোই এখন যুক্তি হিসেবে দাঁড় করিয়েছে পাকিস্তান। তাই এখন বড় প্রশ্ন/ পিসিবির অমন হুঙ্কারের পর টেস্ট সিরিজ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলতে চাওয়ার অবস্থায় কতটা অনড় থাকতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর