মানুষের শুধু সুযোগের প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী

উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের মানুষের শুধু সুযোগের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।১০ এপ্রিল, বুধবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ফেলোশিপ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা চেকপ্রদান অনুষ্ঠানের এই আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কখনোই পিছিয়ে থাকতে পারে না, তাদের শুধু প্রয়োজন সুযোগের। টেকসই উন্নয়নের জন্য গবেষণার প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই গবেষণার ওপর। গবেষণার জন্য আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করতে পেরেছি। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতিকে টেকসই করতে হবে। আর একমাত্র গবেষণাই পারে তা করতে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি প্রথমবার সরকারে এসে লক্ষ করলাম, গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, এতে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হতো না। গবেষণার জন্য বিশেষভাবে প্রণোদনা দেওয়া দরকার, এটা তাদের মাথায় ঢোকেনি। আমি সরকারে এসেই তা করলাম। সে সময় আমাদের রিজার্ভ মানি ও সম্পদ কম থাকার পরও ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলাম গবেষণা খাতে। পরে এটি আরও বাড়ানো হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গবেষণা ও বিজ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ ছিল। এ ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিতে তিনি কাজ করেছেন। আমরাও বিজ্ঞান ও গবেষণার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমরা প্রযুক্তির উন্নয়নে ইতোমধ্যে জাতীয় আইসটি নীতিমালা করতে যাচ্ছি। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, ইন্টারনেট সংযোগ আমরা দিয়েছি। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে গবেষণার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে। সমুদ্র বিষয়ে গবেষণা দরকার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে সমুদ্র গবেষণা বিষয়ে সাবজেক্ট খোলা হয়েছে। মহাকাশ বিষয়ে গবেষণা দরকার। আমরা ভবিষ্যতে যাতে এ ক্ষেত্রকে আরও এগিয়ে নিতে পারি। কোনো ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে থাকব না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর স্কলারশিপে অনেক শিক্ষার্থীকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। ২০০১ সালে তারা ক্ষমতায় আসার পর, এই স্কলারশিপ বন্ধ করে দেওয়া হলো। অনেক ছাত্রকে বিদেশ থেকে ফিরে আসতে হলো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বন অর্জন করেছি। আমরা কোথায় কোথায় আরও উৎকর্ষ অর্জন করতে পারবো এবং কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করতে পারি, তা গবেষণা করে বের করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে দরিদ্র বলে কিছু থাকবে না। ২০৪১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। আমরা সব ক্ষেত্রে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। শুধু পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মধ্যে আমরা আটকে থাকিনি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও করছি। ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করেছি। প্রাকৃতিক পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্য এই পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি। শত বছর পরও মানুষের জীবনমান কেমন হবে তা মাথায় রেখেই এই পরিকল্পনা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে এটাকে এগিয়ে নিতে পারে। কোনো অশুভ শক্তিই যেন বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে না পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করেছিলেন। সংবিধানের ১২ ও ৩৮ অনুচ্ছেদে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সংবিধানের এ দুটি ধারা সংশোধন করে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। এটি আমাদের জন্য সবচেয়ে দুঃখজনক। পৃথিবীতে এ ঘটনা নজিরবিহীন। যারা স্বাধীনতাবিরোধী তারা জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের লালন করে। তারা কখনো দেশের উন্নতি চায় না।’

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর