এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলার অবস্থায় নেই অগ্নিদগ্ধ রাফি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধ মাদরাসাছাত্রীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স তোলার মতো অবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান।

১০ এপ্রিল, বুধবার হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে দগ্ধ ছাত্রীকে দেখার পর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

এ সময় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন, ডা. রায়হানা আওয়াল সুমি, ডা. নওয়াজেশ আহমেদ, ঢামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসিরুদ্দীনসহ অন্য চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একজন রোগীকে বিদেশে পাঠাতে গেলে অ্যাম্বুলেন্সে তোলাসহ যে ধকল সইতে হয়, এই মেয়েটি এখন সে ধকল নিতে পারার মতো অবস্থায় নেই। এ বিষয়টি বিবেচনা করে তাকে এখনই সিঙ্গপুরে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে।’

মুরাদ হাসান বলেন, ‘এই ছাত্রীর শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এরপরও চিকিৎসকরা তাকে সুস্থ করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ডা. রায়হানা আওয়াল সুমিসহ অন্যরা চিকিৎসা করছেন। প্রধানমন্ত্রী ফুলটাইম মনিটরিং করছেন। দফায় দফায় চিকৎসকরা তার আপডেট জানাচ্ছেন। তাকে প্রধানমন্ত্রী সিঙ্গাপুরে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলেছেন। এখানকার চিকিৎসকরা সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।’

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আজ বুধবার সকালে তাকে নিয়ে আমরা আবারও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেছি। তারা আমাদের কাছে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়েছেন। আমরা তা পাঠিয়েছি। সেখানকার মেডিক্যাল বোর্ড, আইসিইউ চিকিৎসক, মেট্রোলজিস্ট, প্লাস্টিক সার্জনসহ সব চিকিৎসক মিলে সিদ্ধান্ত নেন—রোগীর এখন যে অবস্থা, তাতে তাকে জার্নি করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া কঠিন হবে। তাকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে আরও অপেক্ষা করা উচিত।’

সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘গতকাল আমরা যে অপারেশন করেছি, এতে তার শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার একটা উপায় তৈরি করেছি। তার শরীরের চামড়াটা ফুটো ফুটো হয়ে যাওয়ায় বুকে চাপ ধরে ছিল, যার কারণে সে শ্বাস নিতে পারছিল না। আমরা অপারেশন করে শ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। গতকাল তার অবস্থা যেমন ছিল আজও তেমনি আছে। সিঙ্গপুর থেকে কোনো খবর আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত ৬ এপ্রিল, শনিবার সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যায় ওই ছাত্রী। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে বোরকা পরা চার-পাঁচ ব্যক্তি ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়।

পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। বর্তমানে ওই ছাত্রী লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা বর্তমানে ফেনী কারাগারে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর