জিয়াউর রহমান ও ফরিদা ইয়াসমিন দম্পতির ঘরে মাত্র ২৮ সপ্তাহে দুই সন্তানের জন্ম হয়েছিল। গত ১৭ অক্টোবর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই যমজ সন্তান প্রসব করেন জিয়াউর রহমানের স্ত্রী।
নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৯ সপ্তাহ আগে জন্ম নেয়া যমজ সন্তানের একটিকে সেদিনই হারান এই দম্পতি। এরপর অন্য সন্তানটিকে বাঁচাতে টানা ৪৭ দিনের ‘লড়াই’। অবশেষে ভালো আছে নবজাতকটি। শনিবার তাকে নিয়ে ঘরে ফিরেছেন তারা। বেঁচে যাওয়া শিশুটির নাম রাখা হয়েছে মোহাম্মদ ফাইয়াজ-উর-রহমান আহিল।
কক্সবাজার জেলার ঈদগাহ এলাকার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান বলছিলেন, বেঁচে থাকা সন্তানটির অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় চার দিন বয়সী ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামে চলে আসি। চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।
এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহীন ও তার দলের সদস্যদের অধীনে শিশুটির চিকিৎসা শুরু হয়। ছেলে এখন ভালো আছে। চিকিৎসকেরা অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন। আমার পরিবারের সবাই এখন খুশি।
‘সাধারণত ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহ গর্ভে থাকার পর শিশু ভূমিষ্ট হয়। এই শিশু দুটি মাত্র ২৮ সপ্তাহ বয়সে জন্ম নেয়। চিকিৎসা নিতে আসা চার দিন বয়সের শিশুটিকে এনআইসিইউতে রাখা হয়। শারীরিক অপূর্ণতার ঘাটতি মেটাতে এই সময়ে ৩৭ বার তাকে রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান দেয়া হয়। পাশাপাশি ভেন্টিলেশন ও সিপিএপি সাপোর্টও দেয়া হয়,- জানাচ্ছিলেন ডা. মোহাম্মদ শাহীন।
তিনি বলেন, বার বার শ্বাসজনিত সমস্যা হওয়ায় তুরস্ক থেকে আনা ওষুধ শিশুটির শরীরে দিতে হয়। এর মাঝে একদিন তার অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় ১৭ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টেও রাখতে হয়।
‘পরিপূর্ণ সময়ের আগে হওয়া শিশুদের বাঁচানো সহজ নয়। তবে আমি ও আমার দল যথাথথ চেষ্টা করে এ শিশুটিকে সুস্থ ও নতুন জীবন দিতে পারায় খুব ভালো লাগছে।
বার্তাবাজার/এমকে