নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনাঘাট এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা। এতে স্থানীয় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভোগলেও দেখার কেউ নেই।

গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মেঘনা শিল্পনগরীর মেঘনা ফেরিঘাট এলাকায় অবস্থিত মেসার্স আরব এন্টারপ্রাইজ নামে একটি অবৈধ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরিতে পলিথিন রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী পণ্য তৈরি করা হয়। রিসাইক্লিংয়ের জন্য রোদে শুকানো হচ্ছে পলিথিনগুলো। ওই পলিথিনগুলো বেশ কিছু শিশু শ্রমিক মুখে মাস্ক ব্যবহার না করেই ময়লা আবর্জনা থেকে বাছাই করছেন। এতে করে স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে রয়েছে শ্রমিকেরা। এছাড়াও সামান্য বাতাস হলেই এসব পলিথিনের টুকরোগুলো উড়ে যাচ্ছে পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি ও সড়কে ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, দূষিত হচ্ছে এলাকা।

উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের প্রতাপেরচর এলাকার আব্দুল হালিমের ছেলে মো. আবুল মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ী মেসার্স আরব এন্টারপ্রাইজ নামে গড়ে তুলেছেন এই ফ্যাক্টারি।

এ ব্যাপারে আবুল মিয়া বলেন, ফ্যাক্টারি পরিচালনা করার জন্য মেসার্স আরব এন্টারপ্রাইজ নামে একটি টিন সার্টিফিকেট ও ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স আছে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, তার কাছে নেই পরিবেশ অধিদপ্তর, উৎপাদন বিপণন ও ফায়ার সার্ভিসের কোন ছাড়পত্র। শুধু ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স ও টিন সার্টিফিকেট দিয়েই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন।

এদিকে মেঘনা ফেরিঘাটে চলাচলের সড়কে বিষাক্ত প্লাস্টিক বর্জ্য ও পানি ফেলার ব্যাপারে তিনি আরও জানান, স্থানীয় এক নেতার কাছ থেকে তিনি রাস্তাটি ভাড়া নিয়ে বর্জ্য ফেলে কারখানাটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা পরিচালনা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে আমরা সরেজমিনে গিয়ে ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ ব্যাপারে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ না মেনেই গড়ে উঠা কারখানাটিতে প্লাস্টিক ও পলিথিনের বর্জ্য রাস্তায় ফেলার কারণে সেখানকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে। তাই জনস্বার্থে অবৈধ কারখানাটি বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।