মাদারীপুরের রাজৈরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরাদের মাঝে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শাখারপাড় প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা ও বিদ্যালয়ের ২২৫ জন শিক্ষার্থীকে এ বইগুলো দেয়া হয়। এসময় নতুন বই হাতে পেয়ে উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়ে তারা।

এ বই বিতরনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-সচিব (মাদারীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক) মোঃ নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গুলসান আরা, শাখারপাড় প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মুক্তা নেওয়াজ, ইশিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ মোল্লা, শাখারপাড় প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সেলিম শরীফ প্রমুখ।

জানা যায়, ২০১৭ সালে প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন ভ্যানচালক সেলিম শরীফ। পরে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। ২০২০ সালে বিদ্যালয়ের নামে রাজৈর উপজেলার শাখারপাড়ে ২০ শতাংশ জমি কিনে শুরু করেন স্কুলের কার্যক্রম।

বর্তমানে ওই স্কুলে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন ১৯ জন শিক্ষক ও কর্মচারী। সেখানে উপজেলার প্রায় ২৫০ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের বিভিন্নভাবে কারিগরি শিক্ষা দেয়া হয়। কারিগরি শিক্ষার মধ্যে রয়েছে, নকশীকাঁথা তৈরি, ঠোঙ্গা তৈরি, মোমবাতি তৈরি, এলইডি বাল্ব তৈরি ও সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণসহ নানা প্রশক্ষিণ। তবে এতো সুবিধাদাতা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশেই অসুবিধা। বিদ্যালয়ে প্রবেশ মুখে রাস্তার অভাবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা বিদ্যালয় নিয়মিত যাতায়াত করতে পারছেন না। এজন্য সরকারসহ স্থানীয় বৃত্তবানদের কাছে দ্রুত একটি রাস্তা করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জানান, নতুন বই পেয়ে আমাদের ভালো লাগতেছে কিন্তু আমাদের রাস্তাটা হলে আরো ভালো হয়।

প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা আক্তার জানান, শিশুদের আনন্দের সাথে আমাদেরও আনন্দ অনেক বেশি। তবে আমাদের রাস্তাটির অভাবে খুব সমস্যায় আছি। স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুব কম হয়। রাস্তাটা হলে খুব ভালো হতো।

শাখারপাড় প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সেলিম শরীফ জানান, আমাদের ১৯ জন শিক্ষক কর্মচারী এখানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমি ভ্যান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দাড় করেছি। তবে যদি রাস্তা এবং একটি ভ্যান হতো তাহলে খুবই ভালো হতো। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক বাড়তো।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা জানান, একটি শিশুকে লালন পালন করাই খুব কষ্টকর। আর এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের যারা লালন পালন করেন সেসব মায়েদের জানাই সালাম। এছাড়াও এই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে আমরা সকলেই একত্রিত হয়ে কাজ করবো।

উপ-সচিব (মাদারীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক) মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, এখানে সমস্যাগুলো আমরা জেনেছি। এটা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবেই সমাধান করতে হবে। আমরা এ প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করবো।

বার্তাবাজার/এম আই