দুদিন আগেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পঞ্চাশের দশকের জনপ্রিয় ফুটবলার জহিরুল হক। কিন্তু আর বাসায় ফেরা হলো না তার। শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

১৯৩৫ সালের ৫ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন জহিরুল। শুক্রবারই ৮৯তম জন্মদিন পূর্ণ হয়। তখনও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। জহিরুলের ছেলে রেজওয়ানুল হক জানিয়েছেন, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

এদিন বাদ জোহর আনসার ক্যাম্পের পাশের মসজিদে জহিরুলের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জানাজা হবে সন্ধ্যায় মণিপুরি পাড়ায় খেজুর-বাগান জামে মসজিদে। এরপর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

পুরো নাম জহিরুল হক হলেও দেশের ফুটবল অঙ্গনে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘মোহামেডানের জহির ভাই’ হিসেবে। ঢাকা মোহামেডানের জার্সিতে ১৯৬০ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত খেলেছেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির কিংবদন্তি ফুটবলারদের একজনও তিনি। মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচবার।

এ ছাড়া পূর্ব পাকিস্তান থেকে হাতে গোনা যে কজন ফুটবলার পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলেছিলেন তাদেরই একজন ছিলেন জহিরুল হক। ২০০১ সালে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারও পেয়েছিলেন এই কৃতী ফুটবলার ।

১৯৫৪ সালে তেজগাঁও ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন ক্লাব দিয়ে ঢাকার ফুটবলে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত এই ক্লাবে খেলে পরের দুই বছর খেলেন সেন্ট্রাল প্রিন্টিং অ্যান্ড স্টেশনারিতে। পুলিশ দলে খেলেন ১৯৫৯ সালে। পূর্ব পাকিস্তান দলে খেলেছেন ১৯৫৭-৬০ পর্যন্ত। ১৯৬০ সালে ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান দলের অধিনায়ক। পাকিস্তান জাতীয় দলের জার্সিতে ১৯৬১ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি ম্যাচ খেলেন বার্মার সঙ্গে। ১৯৬২ সালে খেলেছেন মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে।

বাংলাদেশে জহিরুল হকের চেয়ে বেশি বয়সী ফুটবলার বেঁচে আছেন শুধু একজনই। তিনি হলেন পূর্ব পাকিস্তান দলের গোলকিপার রণজিত দাশ। তিনি এখন সিলেটে থাকেন।

বার্তা বাজার/জে আই