লোকশানের কথা মাথায় নিয়েই এবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চাষিরা মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যাস্ত সময় পার করছেন । গেল মৌসুমের তুলনায় দিগুন বেশি খরচে এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম হবে পেঁয়াজ চাষের ।

চাষিরা বলছে অনুকুল আবহাওয়া ও বাজারদর ভালো থাকলে লাভবান হবেন তারা ৷ তবে চাহিদা অনুপাতে সরবারহ বেশি হলে লোকসান গুনতে হতে পারে তাদের, তাই বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি চাষিদের।

এদিকে সোমবার উপজেলার বড় সবজির পাইকারী বাজার তারাগুনিয়ায় আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৭৫- ৮০ টাকা কেজি দরে আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫-১০০ টাকা কেজি দরে।

তবে পেঁয়াজের সংকট কাটিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রনদনার মাধ্যমে গ্রীষ্মকালীন পেয়াজ চাষে দুই’শ জন চাষিকে সহায়তা করেছে কৃষি অফিস যা উঠতে শুরু করবে অক্টোবর – নভেম্বর মাসে।

উন্নত মানের পেঁয়াজ চাষের সুনাম বহন করা ওই উপজেলায় প্রতি মৌসুমে মুড়িকাটা, হালি ও দানা জাতের পেঁয়াজ চাষ হয় এর মধ্যে আগাম জাত মুড়িকাটা যা উপজেলার সব ইউনিয়নেয় ইতিমধ্যে চাষ শুরু হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষের সম্ভবনা রয়েছে, তবে লক্ষ্যমাত্র অতিক্রম করার সম্ভাবনা বেশি। এখন পর্যন্ত চাষ হয়েছর ১৮০০ হেক্টর জমিতে।

একাধিক পেঁয়াজ চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এবার গেলো মৌসুমে তুলনায় বেশি খরচে পেঁয়াজ চাষ করছেন তারা গেল মৌসুমে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচে পেঁয়াজ চাষ করলেও এবার শুরুতেই ৬৫ থেকে ৭০ হাজর টাকা খরচ করতে হচ্ছে পেঁয়াজ চাষিদের ।

বিজের ধরন ভেদে ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ বিজ। বিঘাপ্রতি ভালো মানের বিজ লাগছে ১০ মন। এছাড়া শ্রমিকের মজুরি, জমির চাষ, সেচ ও সারে খরচ হচ্ছে ১৫ থেক ২০ হাজার টাকা যা গেল বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

বকুল মন্ডল নামের এক পেঁয়াজ চাষি জানিয়েছেন, এবার তিনি তার ৪ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ করেছেন বিঘাপ্রতি তার খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন তিনি।

টেঙ্গর মন্ডল নামের আরেক পেঁয়াজ চাষি বলেন, এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করবেন ৩ বিঘা লাগানো শেষ হয়েছে। তবে লোকসানে বিষয়টি মাথায় নিয়েই তারা চাষ করছেন। তবে বাইরে থেকে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ থাকলে ভালো দাম পাবার আশা করছেন এই চাষি।

সহিদুল ইসলাম নামের আরেক চাষি জানিয়েছেন, এবার চাষের খরচ বেশি হওয়ায় পেঁয়াজের চাষ কম করছেন তিনি। এসময় তিনি আরো বলেন চাষিরা এবার যে হারে পেঁয়াজ চাষ করছে লোকসানের কথাটাও মাথায় রাখা দরকার।

এবিষয়ে দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, এবার পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার সম্ভাবনা বেশি। আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কম খরচে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছি আমরা এবছর ৪৭০ জন চাষিকে সহায়তা করেছি আরো ২০০ জনকে সহায়তা করা হবে। যেন বাজারে কোন প্রকার সঙ্কট তৈরি না হয়।

বার্তা বাজার/জে আই