ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে নিখোঁজের প্রায় ১৮ ঘন্টা পরে মা ও দুই শিশু সন্তানের হাত বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর)সকালে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাশিডাঙ্গা এলাকার তীরনই নদী থেকে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- কাশিপুর এলাকার রহিম উদ্দিনের স্ত্রী নাসিমা (৪০), তার ছেলে শাওন (৮) ও সাফায়েত (৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মরদেহ তিনটি মায়ের আচল দিয়ে হাঁত বাঁধা ছিল। অনেকে ধারণা করছেন এটি হত্যাকাণ্ড, আবার কেউ কেউ বলছেন পরিবারের সাথে অভিমান করে তাদের হাত বেধে নদীতে ঝাপ দিয়ে আত্মহ্ত্যা করেছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বকুল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কাশিডাঙ্গা গ্রামের রহিমের স্ত্রী তার ৫ বছর ও ৮ বছর বয়সী দুই ছেল সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পাশের তীরনই নদীর ধারে গরু চড়াতে যায়। তবে বিকেল ৪টার পর মা ও ওই দুই শিশু সন্তানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন তাদের তিনজনেরই লাশ তীরনই নদী থেকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের সময় শিশু দুটির হাত মায়ের শাড়ির আঁচল দিয়ে বাঁধা ছিল। তাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

পারিবারিক ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নাসিমা ও তার দুই শিশু সন্তানসহ তীরনই নদীর ধারে ছাগল চড়াতে যায়। সেখানেই (নদীতে) তারা দুপুরের গোসল করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। পরে সন্ধ্যা হলেও নাসিমাসহ তার দুই শিশুপুত্র বাড়িতে না ফেরায় তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেন। অনেক রাত পর্যন্ত নদী এলাকাসহ বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খুঁজেও তাদের পাওয়া যায়নি।

পরে আজবার সকালে নাসিমার শ্বশুর সামসুল হক তীরনই নদীর ধারে নাসিমাসহ দুই শিশু সন্তানকে বালুর মধ্যে আটকা থাকা অবস্থায় দেখতে পায়। পরে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় লাশ নদী থেকে তোলা হয়।

নাসিমার মা খালেদা ও বোন এ ঘটনাকে হত্যা বলে দাবি করছেন। খালেদা বেগম বলেন, তার জামাই একজন জুয়াড়ি। জুয়ার টাকার জন্য আমার মেয়েকে প্রায় অত্যাচার করত।

অপরদিকে নাসিমার স্বামী আব্দুর রহিম ও শ্বশুর সামসুল হক ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবি করছেন। এ অবস্থায় তাদের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গুলফামুল ইসলাম মন্ডল বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাসিমা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে সন্তানদের নিয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় আজ সকালে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার পরিবারের সদস্যরা। এর কিছুক্ষণ পরেই খবর আসে তীরনই নদীতে মা ও দুই সন্তানের লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

এএসপি রেজাউল হক মুঠোফোনে জানান, লাশের সুরতহাল শেষে যথারীতি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। সে রিপোর্টের পর এ মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

বার্তাবাজার/এম আই