চাঁদা না দেওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রধান প্রকৌশলী ও নিরাপত্তা কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম রাজু মুন্সী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৯টায় অভিযুক্ত রাজু মুন্সী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাকের কাছে দশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এর ৩০ মিনিট পর নিরাপত্তা দপ্তরে এসে রাজু মুন্সী ‘এই রাজ্জাক এখান থেকে বের হয়ে যা, নইলে মারবো’ বলে হুমকি দেন। তখন অন্য নিরাপত্তা কর্মীরা রাজুকে সরিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পর প্রশাসনিক ভবনের সামনে গেলে রাজু মুন্সী আব্দুর রাজ্জাককে ধাক্কা দেন এবং মারতে তেড়ে যান।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজল কাটা পাহাড় এলাকায় চলমান কাজ পরিদর্শনকালে রাজু মুন্সী তাকে কিল-ঘুসি মারেন। সেখান থেকে সরে গেলে এর কিছুক্ষণ পর প্রশাসনিক ভবনের সামনে আবারও আরেকবার মারতে যান।

প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজল বলেন, ‘রাজু মুন্সী প্রথমে কাটা পাহাড় এলাকায় এবং পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অসংখ্য লোকের সামনে আমাকে মারতে আসে। উপস্থিত লোকজন না থাকলে আমার প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ক্যাম্পাসে মানসম্মান নিয়ে চলা দায়। তাদের নানা দাবি-দাওয়া থাকে। সে (রাজু) দুদিন আগেও একটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেয়। আমি বিষয়টা প্রক্টরকে অবহিত করেছিলাম।’

প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘রাজু মুন্সী সকালে এসে আমাদের এক প্রহরীকে বলে তার জন্য চাঁদা রেডি রাখতে। এর ৩০ মিনিট পর এসে আমাকে মারার হুমকি দেয় এবং পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ধাক্কা মারে। আমি উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

এদিকে অভিযুক্ত রাজু মুন্সী বলেন, ‘তারা (প্রধান প্রকৌশলী ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা) ঘুস গ্রহণ ও নিয়োগ সংক্রান্ত নানা অনিয়মে জড়িত। আমার সামনেই প্রধান প্রকৌশলী ঘুসের টাকা নিয়েছেন। নিয়োগ সংক্রান্ত নানা অভিযোগ আছে নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়া টেন্ডারও তার নিয়ন্ত্রণে। আমি এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। কারণ আমার প্রতিবাদের ভাষা একটু বাজে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার নামে অভিযোগ দিয়েছে, আরও অভিযোগ হবে। এগুলো নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কারণ আমি শেখ হাসিনার রিজার্ভ ফোর্স, ইলেকশনে আমাকে কাজে লাগবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নূর আহমদ বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরইমধ্যে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও তাদের নিয়ম অনুসারে ব্যবস্থা নেবে।

বার্তা বাজার/জে আই