ঐতিহ্য হারাতে বসেছে পটুয়াখালীর ‘রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়’। প্রতিষ্ঠানটির নামের সঙ্গে ‘মডেল’ কথাটি যুক্ত হলেও পরীক্ষার ফলাফলে মডেল হতে পারছে না ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠটি। উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির এমন দশায় অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে জানা যায়, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় বিদ্যালয়টি থেকে ১৫৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এরমধ্যে ১১১ জন কৃতকার্য হয় এবং ৪৫ জন অকৃতকার্য হয়েছে। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র একজন। বিদ্যালয়টিতে ফলাফল বিপর্যয়ের এ চিত্র শুধু এ বছর নতুন নয়। ২০২২ সালের পরীক্ষায় ১২৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এরমধ্যে ৯৮ জন কৃতকার্য হয়েছে। অকৃতকার্য হয়েছিল ৩১ জন। ওই বছর বিদ্যালয়টি থেকে কেউ জিপিএ-৫ অর্জন করতে পারেনি।

এমন ফলাফল বিপর্যয়ের ঘটনায় বিদ্যালয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ফল প্রকাশের পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষকদের গাফিলতি, দায়িত্বহীনতা, কোচিং এবং মূল পেশার প্রতি মনযোগ না দিয়ে রাজনীতি ও ব্যবসায় সময় দেওয়াকে দায়ী করেছেন অনেকেই। তবে কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত থাকা এবং অভিভাবকদের অসচেতনতার কথাও। এছাড়া মাধ্যমিক পর্যায় থেকে ছাত্রদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়াও দায়ী মনে করছেন মন্তব্যকারীরা।

শিক্ষানুরাগীদের মতে, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবেও রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ব্যবহার হয়ে থাকে। যার কারণে পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পাশাপাশি শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা ও অভিভাবকদের অসচেতনতাও ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে; বলছেন তারা। অভিভাবকরা বলছেন, মডেল স্কুলে যেখানে ফলাফল ভাল হওয়ার কথা সেখানে হচ্ছে বিপরীত। এতে হতাশ তারা। তাদের মতে, শিক্ষকরা কি ক্লাস করে ? নাকি স্কুলে আসে আর যায়।

ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ জানতে রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন নেছারের মুঠোফোনে কল করলে তিনি বলেন, ঢাকায় আছেন। ফ্রি হয়ে কল দিবেন। জানা যায়, শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে অংশ নিতে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার অনাদি কুমার বাহাদুর বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষা শতভাগ স্বচ্ছ হয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা কোন ধরণের সুযোগ পায়নি। এছাড়া মডেলে শিক্ষার্থী বেশি। কিন্তু শিক্ষক সংকট রয়েছে।

বার্তা বাজার/জে আই