ভেজালমুক্ত ও অর্গানিক খাদ্যের মধ্যে অনেকটা আস্থার স্থান ধরে রেখেছে ডাব। এই ডাবের জন্য বিখ্যাত যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার কয়েকটি গ্রাম। বর্তমানে প্রচণ্ড গরমে কদর বেড়েছে ডাবের।

এ এলাকার ডাব যশোরের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। ১২ মাস ধরেই চলে এ ব্যবসা। শীতকালে ডাবের চাহিদা কম থাকায়, ডাব না কেটে নারিকেল পর্যন্ত রাখা হয়। ডাব-নারকেল ঘিরে এলাকায় দুটি আড়ৎ গড়ে উঠেছে। এখান থেকে প্রতি মাসে ৫-৭ লাখ টাকার ডাব-নারকেল কেনাবেচা হয়। এলাকায় রয়েছে ছোট বড় ৪০-৫০ জন ডাব-নারকেল ব্যবসায়ী।

স্থানীয়রা জানান, প্রচণ্ড গরমে এখন ডাব ব্যবসা রমরমা। বসতবাড়িতে, পতিত জমিতে, উঁচু জমিতে, বাগানে, রাস্তার পাশে, ঘেরের পাড়সহ বিভিন্ন জমিতে লাগানো গাছ থেকে উৎপাদিত হয় ডাব।

ডাব ব্যবসায়ী তরিকুল জানান, তিনি সামান্য পুঁজি নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করেছিলেন। প্রথম দিকে তিনি নিজে ডাব কেনে পাইকারিদের কাছে বিক্রি করতেন। দিনে দিনে ব্যবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন তিনি প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪-৫ হাজার পিস ডাব ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে পাঠান। প্রতি সপ্তাহে একটি করে চালান পাঠান। এতে এক লাখ টাকার বেশি ডাব থাকে। ডাব পাঠাতে ট্রাক ভাড়া বাবদ খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। গ্রামে গ্রামে বড় ব্যবসায়ীদের ৩৫-৪০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ডাব সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন।

ডাব ব্যবসায়ী আবু তাহের জানান, গাছ থেকে সংগ্রহ করা ডাব তিনটি গ্রেডে ভাগ করা হয়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের থেকে আকার ভেদে ৩৫-৪০ টাকা প্রতি পিস ক্রয় করেন। স্থানীয় বড় ব্যবসায়ীদের কাছে সেই ডাব তারা বিক্রি করেন ৪৫-৫০ টাকা। বড় ব্যবসায়ীরা এই ডাব ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে পাইকারি বিক্রি করেন ৬০-৭০ টাকা পিস। আর ভোক্তাদের কিনতে হয় ৮০-৯০ টাকা।

ডাব গাছের মালিক নিমাই বিশ্বাস জানান, প্রচুর নারিকেল গাছ রয়েছে তার। নারিকেলের গাছে ফলন খুব ভালো। তাদের প্রায় ৩০-৪০টি নারিকেল গাছ রয়েছে। যা থেকে বছরজুড়ে ডাব ও নারকেল বিক্রি করে থাকেন। ডাব ব্যবসায়ীদের খুঁজে আনতে হয় না। তারা নিজেরা এসে সংগ্রহ করে নিয়ে যান।

চিকিৎসক আনারুজ্জামান টুকু বলেন, ডাবে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে। এছাড়া ডাবের পানির অসংখ্য গুণাগুণ রয়েছে যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। শিশুসহ সব মানুষের পরিমাণমত ডাবের পানি পান করা উচিত।