আগামী নির্বাচন সময়মতো হবে এবং তা বিরোধীরা ঠেকাতে পারবে না—আজ বুধবার দুপুরে ঢাকায় সমাবেশের মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীদের এই বার্তা দেবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এই সমাবেশে বিশাল জমায়েত করে রাজপথে নিজেদের ‘শক্তি’ দেখাতে চায় দলটি। পাশাপাশি জনগণ আওয়ামী লীগের পাশে আছে, সেটিও দেখাতে চায় দলটি।

আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগে দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ হলেও বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। কারণ, বিএনপি সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন ঘোষণা দিতে যাচ্ছে আজ (দুপুরে নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে দলটি)। এর অর্থ হচ্ছে দলটি নির্বাচন ঠেকানোর পথে হাঁটছে। এ ছাড়া দলটি বিদেশিদের কাছে এবং বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলছে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন নেই। যে কারণে রাজপথে ধারাবাহিকভাবে বড় জমায়েত করে আওয়ামী লীগ দেখাতে চায় তাদের সঙ্গে জনগণ আছে।

সরকার ও আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, আজকের দুই সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার বা তাঁদের ওপর চড়াও না হওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা আছে। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা-কর্মীরা যাতে নিজেরাও সংঘাতে না জড়ান, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, গত ডিসেম্বর থেকে আওয়ামী লীগ পাল্টা রাজপথে নামায় বিএনপি কিছুটা চাপে পড়ে। ফলে দলটির সরকারবিরোধী আন্দোলনে কিছুটা ঢিলেঢালা ভাব চলে আসে। বিএনপির মিত্র দলগুলোতেও কিছুটা আস্থার সংকট, অস্থিরতা দেখা গেছে। কিন্তু মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণা, দেশটির কর্মকর্তাদের একাধিকবার বাংলাদেশ সফর এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৎপরতার মুখে বিরোধীরা নতুন করে রাজপথে নামার কৌশল নিয়েছে।

আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগে দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ হলেও বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। কারণ, বিএনপি সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন ঘোষণা দিতে যাচ্ছে আজ (দুপুরে নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে দলটি)। এর অর্থ হচ্ছে দলটি নির্বাচন ঠেকানোর পথে হাঁটছে।

আওয়ামী লীগের আরেকজন নেতা বলেন, রাজপথে বড় জমায়েত দেখাতে হবে। নতুবা প্রশাসন ও দলের কর্মীদের মনোবলে চিড় ধরতে পারে। এ ছাড়া এখন বিএনপি রাজপথ দখলে নিলে ভোট ঠেকানোর পথেও তারা এগিয়ে যাবে। ফলে রাজপথে ‘শক্তি প্রদর্শনের’ বিকল্প নেই।

দলীয় সূত্র বলছে, বিএনপিসহ বিরোধীদের এক দফার আন্দোলন গত ডিসেম্বরের আন্দোলনের মতোই নিষ্ফল হবে, এটা প্রমাণ করতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য দলের নেতা-কর্মীদেরও সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে আজকের সমাবেশ থেকে দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। বিএনপির সমাবেশের এক ঘণ্টা পর আওয়ামী লীগের সমাবেশ করার পেছনেও কারণ রয়েছে। বিএনপি কী বলে এবং কী কর্মসূচি নেয়, তা দেখে আওয়ামী লীগের সমাবেশ থেকে পাল্টা কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিএনপির বক্তব্যের জবাবও থাকবে। এ ছাড়া বিএনপি কত লোক জমায়েত করতে পারে, সেটিও দেখার জন্য পরে সমাবেশের সময় দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

রাজপথে শক্তি দেখানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অলরাউন্ডার দল। ক্ষমতায়, বিরোধী দলে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ রাজপথ দখলে রাখতে পারে। বিএনপিকে মাঠে একা খেলতে দেওয়া হবে না।’

বার্তাবাজার/এম আই